প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান অনুচ্ছেদ রচনা এখন ছাত্রছাত্রীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্লগে দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যা ৫ম শ্রেণির বাংলা রচনা সাজেশনের জন্য আদর্শ। বিজ্ঞান ও মানব সভ্যতা রচনা, বিজ্ঞানের জয়যাত্রা এবং বিজ্ঞানের সুফল ও কুফল বিষয়গুলিও বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা ক্লাস 5 এর উপযোগী করে গঠিত, যাতে শিক্ষার্থীরা সহজে বোঝে ও আত্মস্থ করতে পারে। স্কুল পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য এটি একটি নির্ভরযোগ্য ও কার্যকর বাংলা রচনা গাইড, যা পাঠ্যক্রম অনুযায়ী সাজানো হয়েছে।
আজকের এই প্রতিবেদনে তিনটি অনুচ্ছেদ রচনা আলোচনা করা হয়েছে। যথা - ১.প্রতিদিন এর জীবনে বিজ্ঞান, ২. আধুনিক জীবনে বিজ্ঞান ও কুসংস্কার, ৩. বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ
প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান অথবা দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
আধুনিক যুগ হলো বিজ্ঞানের যুগ । আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে মানুষ আজ বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল । বিজ্ঞান ছাড়া আজকের পৃথিবী অচল। আমাদের দিন শুরু হয় বিজ্ঞানের ব্যবহারের মাধ্যমে। ভোরে ঘড়িতে এলাম শুনে ঘুম ভাঙ্গা থেকে আরম্ভ করে সারাদিনের বিভিন্ন কাজকর্মে রয়েছে বিজ্ঞানের অবদান। পৃথিবীর নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমরা জানতে পারি সংবাদপত্রের মাধ্যমে, বেতারের মাধ্যমে । আমরা চাইলেই আজ যে কোনো দেশ বিদেশের খবর নিমিষেই টেলিভিশনে দেখতে পাই। ঘরবাড়ি, পথঘাট, অফিস আদালত, সবেতেই রয়েছে বিজ্ঞানের অবদান । চিকিৎসা ক্ষেত্রেও বিজ্ঞান বেশ অবদান রেখেছে। আগে যখন মানুষ বিভিন্ন রোগে মারা যেত এখন আর তা হয় না । বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের মাধ্যমে চিকিৎসা হয়। দৈনন্দিন জীবনে যোগাযোগের মাধ্যমকে অনেক সহজ করে তুলেছে, এখন আমরা খুব সহজেই ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ করতে পারি। বিজ্ঞান আমাদের দিয়েছে সুখ স্বাচ্ছন্দ আরাম দায়ক জীবন । তবে বিজ্ঞান যত উন্নতি লাভ করেছে মানুষ ততই হয়ে উঠেছে অলস । আমরা এখন সামান্য কাজের জন্যেও বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল । মানুষ যে বিজ্ঞান তৈরি করেছে, আজ আমরা সেই বিজ্ঞানের দাস হয়ে পড়েছি। তাই বিজ্ঞান কে অভিশাপ হিসেবে গ্রহণ না করে আশীর্বাদ রূপে গ্রহণ করতে হবে। তবেই বিজ্ঞান গড়বে মানুষের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ ।
আধুনিক জীবনে বিজ্ঞান ও কুসংস্কার
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ জীব হলো মানুষ। মানুষ তার বুদ্ধি দিয়ে পৃথিবীকে জয় করেছে। অভাবনীয় বৈজ্ঞানিক উন্নতি ঘটিয়েছে। এত অভাবনীয় উন্নতিসাধন করেও আজও আমাদের সমাজে কুসংস্কার লক্ষ্য করা যায়। একদিকে চলছে বিজ্ঞানের ব্যাপক উন্নয়ন আর অন্যদিকে চলছে কুসংস্কারের তাণ্ডব। কুসংস্কার হল মানব জীবনের একটি অন্ধকার অধ্যায়। যে মানুষ একদিন গুহা বাসি ছিল সেই মানুষ আজ পাড়ি দিচ্ছে মহাকাশে । নতুন নতুন আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে গোটা বিশ্বকে বশ করেছে। অথচ সেই একইসঙ্গে মানব জীবনের অঙ্গে রয়ে গেছে কিছু কুসংস্কার। আজও কিছু মানুষ বিশ্বাস করে যে- 'এক শালিক দেখে দিন খারাপ যাওয়া, যাত্রাকালে টিকটিকির ডাক কে অশুভ মনে করা' ইত্যাদি। তাই প্রত্যেক নাগরিককে কুসংস্কার দূরীকরণে সচেতন হতে হবে। মানুষের মন থেকে কুসংস্কার দূর করার জন্য মানুষকে বিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা তুলে ধরতে হবে। সবার মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে । বিভিন্ন অনুষ্ঠান বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ও সরকারি উদ্যোগে সচেতন বৃদ্ধি করতে হবে। বিজ্ঞানের জয়যাত্রা তখনই সার্থক হবে যখন মানুষ বিজ্ঞানকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করবে। পৃথিবীজুড়ে যে বিজ্ঞানের চরম উন্নতি ঘটছে । তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যখন সমস্ত মানুষ চলতে পারবে, তখনই কুসংস্কার পর আসতে হবে ।
বিজ্ঞানের অপব্যবহার অথবা বিজ্ঞান আশীর্বাদ, না অভিশাপ
আধুনিক মানব সভ্যতার প্রধান স্তম্ভ হলো বিজ্ঞান। বিজ্ঞান হল আলাদিনের সেই আশ্চর্য প্রদীপের মতো যা মানুষের হাতে তুলে দিয়েছে অফুরন্ত শক্তির সম্ভাবনা। বিজ্ঞানের সমস্ত কল্যাণময় সুবিধা ভোগ করেও আমরা ভুলতে পারি না হিরোশিমা ও নাগাসাকির মর্মান্তিক ঘটনা । মানুষ শুধু বিজ্ঞান কে কল্যাণকর্মে আটকে রাখেনি । মানুষ বিজ্ঞান কে বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছে আতঙ্কের অস্ত্র হিসেবে । বিজ্ঞান যেভাবে আমাদের আগেই নিয়ে গিয়েছে ঠিক ততটাই আতঙ্কের ও ধ্বংসের সৃষ্টি করেছে। বিজ্ঞান আমাদের এগিয়ে দিয়েছে জীবনের প্রতিটি পদে। যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে, শিক্ষা ক্ষেত্রে কম্পিউটার, চিকিৎসার জন্য আধুনিক সরঞ্জাম, ইত্যাদি। আবার বিজ্ঞান তার বিধ্বংসী শক্তিরও প্রভাব দেখিয়েছে। যন্ত্র সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পরিবেশ আজ দূষিত । বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্ররক্ষার নামে অন্য রাষ্ট্রকে গ্রাস করার জন্য , ও রাজনৈতিক স্বার্থ জন্য পৃথিবী জুড়ে যে ভয়ানক মরণাস্ত্র তৈরি হচ্ছে । তা শুধুমাত্র মানুষ মারার সুকৌশল ছাড়া আর কিছুই নয় । বিজ্ঞানীর অপব্যবহার সম্পর্কে মানুষকে সজাগ করে তুলতে হবে। বিজ্ঞানের ভালো দিকগুলি ব্যবহার করার সুযোগ যেমন মানুষের কাছে রয়েছে। তেমনি খারাপ দিকগুলি প্রতিরোধ করার উপায় ও মানুষের হাতেই রয়েছে। বিজ্ঞানের ভালো দিক গুলি আমাদের গ্রহণ করতে হবে। বিজ্ঞান যেন আমাদের উপরে অভিশাপ হয়ে না দাঁড়ায়। বিজ্ঞানের অভাবনীয় শক্তিগুলিকে আশীর্বাদ রূপে গ্রহণ করতে হবে
পরামর্শ
উপরে আলোচিত অনুচ্ছেদ রচনাগুলি বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে করা হয়েছে। এই অনুচ্ছেদে রচনাগুলি Class 4, Class 5, Class 6, এর ছাত্র ছাত্রীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তোমরা উপরে রচনা গুলি ভালো করে পড়ে মুখস্ত করবে। তারপর খাতায় ২-৩ বার লিখে অভ্যাস করবে। এই অনুচ্ছেদ রচনাগুলিতে কিছু শক্ত ভাষার ব্যবহার হয়েছে। তবে তাতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তোমরা চাইলে সেগুলি পরিবর্তন করতে পারো। কিন্তু নতুন ভাষা বা নতুন শব্দ ব্যবহার করলে তোমার লেখাটি সবার থেকে আলাদা হবে। যার ফলে বেশি নাম্বারের পাশাপাশি ভাষা জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে।