স্কুলে চিঠি লেখার সঠিক নিয়ম জানতে চাইছেন? এই ব্লগে আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন স্কুলের চিঠি কিভাবে লেখে, চিঠি কী দিয়ে শুরু করতে হয়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে কিভাবে চিঠি লিখতে হয় সহ বিভিন্ন অফিসিয়াল চিঠি লেখার কৌশল। সঠিক ভাষা, এবং গঠনগত দিক দিয়ে একটি প্রাতিষ্ঠানিক চিঠি কেমন হওয়া উচিত তা এখানে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। বাংলায় অফিসিয়াল চিঠি লেখার জন্য শুরু, মূল বক্তব্য ও উপসংহারের উপযুক্ত রূপ এবং নমুনা চিঠিও পাবেন। যারা ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক বা যেকোনো অফিসিয়াল প্রয়োজনে চিঠি লিখতে চান, তাদের জন্য এই গাইডটি অত্যন্ত উপযোগী। এখনই জেনে নিন কিভাবে সঠিক নিয়মে চিঠি লিখবেন। এবং আপনার লেখনীকে করে তুলুন আরও পরিপাটি ও প্রভাবশালী।
বাংলায় অফিসিয়াল চিঠিপত্র লেখার নিয়ম
চিঠিপত্র সাধারণত লেখা হয় দূরের মানুষকে । কিন্তু বর্তমান সময়ে চিঠির ব্যবহার নেই বললেই চলে। চিঠি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে যথা ব্যক্তিগত চিঠি, সামাজিক চিঠি, সরকারি চিঠি, ইত্যাদি প্রকারের হয়।
চিঠি লিখার জন্য বেশ কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করতে হবে । এই পত্র লেখার নিয়ম কে সাধারণত পাঁচটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে । নিম্নে সেই পাঁচটি অংশ আলোচনা করা হলো-
১. সরকারি পত্র ছাড়া চিঠি লেখার সময় পত্রের উপরের ডানদিকে চিঠি লেখক এর ঠিকানা, যে তারিখে লিখছে সেই তারিখের উল্লেখ, এইসব বিষয়ে তুলে ধরতে হয়। ব্যবসা-বাণিজ্য বা সরকারি চিঠিপত্রের ক্ষেত্রে এই অংশটি পত্রের নিচের বাঁ দিকে থাকে।
২. চিঠি লেখার সময় প্রথমেই শুরুতে যাকে লেখা হচ্ছে, তাকে সম্বোধন করার জন্য একটি মূল অংশ ঠিক উপরের বাঁদিকে লিখতে হয়।
যদি গুরুজন হয় সে ক্ষেত্রে শ্রীচরণেষু, শ্রীচরণ কমলেসু, পরম পূজনীয় বা পূজনীয় ব্যবহার করতে হয়।
যদি বয়সে ছোট হয় সে ক্ষেত্রে কল্যাণীয়, কল্যাণীয়েসু, স্নেহভাজনেষু, এইসবের ব্যবহার করতে হয় ।
যদি চিঠি লেখা হয় কোন প্রিয়জন বা বন্ধু-বান্ধবকে সেক্ষেত্রে ব্যবহার করতে হবে প্রিয়বর, প্রিয়বরেষু, বন্ধুবর ইত্যাদি ।
সম্মানীয় ব্যক্তি কে চিঠি লিখলে ব্যবহার করতে হবে শ্রদ্ধেয়, মাননীয়, মাননীয়া ইত্যাদি ।
৩. চিঠি লেখার জন্য এই অংশটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এখানে পত্র লেখকের মূল বক্তব্য তুলে ধরতে হয়। পত্র লেখকদের মনের ভাব, ইচ্ছা, ইত্যাদি বিষয় সবিস্তারে লিখতে হয় ।
৪. উপরোক্ত বিভাগ গুলি সম্পূর্ণ করার পর পত্র সমাপ্তি করতে হয় । এর জন্য ব্যবহার হয় ইতি, নিবেদন, নমস্কারান্তে, নিবেদান্তে, ইত্যাদি ।
এই শব্দ গুলি নির্ভর করে চিঠি কাকে লিখা হচ্ছে, যদি বয়সে বড় অর্থাৎ গুরুজন হয় । সে ক্ষেত্রে সেবক, আশীর্বাদাকাঙ্ক্ষী, ব্যবহার করতে হবে ।
বয়সের ছোট হলে শুভার্থী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও ও আত্মীয়-স্বজন হলে বিনীত নিবেদক ব্যবহার করতে হবে।
৫. চিঠির সর্বশেষ অংশ হলো পত্র প্রাপ্যকের নাম ও ঠিকানা, ঠিকঠাক করে লিখা ।
ব্যবহারিক প্রয়োজনে সরকারি, আধা সরকারি বা অফিসে শিক্ষাকেন্দ্রে বা কোন ব্যবসা ক্ষেত্রে আমাদের আবেদনপেশ করতে হয় । এই ধরনের পত্রগুলোকে বলা হয় আবেদনপত্র । এখানে কোন ভাবাবেগ প্রকাশ করা হয় না। এখানে শুধুমাত্র মূল বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়।
নিচে একটি উদাহরণ দেওয়া হল।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে চিঠি লেখার নিয়ম
বিষয়-শ্রেণী শিক্ষক মহাশয়ের কাছে ছুটি মঞ্জুরের জন্য আবেদন
মাননীয় শিক্ষক মহাশয়
ওন্দা উচ্চ বিদ্যালয়
ওন্দা, বাঁকুড়া
সবিনয় নিবেদন
মহাশয়,
আমার বিনীত নিবেদন এই যে আমি দীপক পরামানিক । আপনার বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র। আমার বিভাগ ক এবং আমার ক্রমিক নাম্বার ১৫। আমার দিদির বিবাহর উপলক্ষে আগামী ৩ ই জুন থেকে ৬ ই জুন, বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকা আমার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না । তাই আমার একান্ত প্রার্থনা এই যে, আপনি দয়া করে আমার অনুপস্থিতির জন্য ওই চার দিন ছুটি মঞ্জুর করে আমাকে অনুগৃহীত করবেন।
বাংলায় পত্র রচনা লেখার নিয়ম কী ? ?
চিঠির সর্বপ্রথম উপরে, চিঠি প্রেরকের নাম, ঠিকানা ডানদিকে লিখতে হবে, তারপর সম্ভাষণ জানিয়ে চিঠির মূল বিষয় লিখতে হবে । এবং শেষে বিদায় জানিয়ে, নিজের নাম ঠিকানা ও স্বাক্ষর করতে হবে।
বিদ্যালয়ে চিঠি লেখার নিয়ম কী ?
একেবারে উপরে বাম দিকে, প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা ও ঠিকানা লিখতে হবে। তারপর চিঠির বিষয় লিখে, শেষে সম্ভাষণ জানিয়ে নাম বিভাগ শ্রেণী ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে ।
চিঠির শুরুতে কি কি লিখতে হয় ?
শুরুতে নাম ঠিকানা জায়গার নাম লিখতে হয় তারপর শুরু করতে হয়।